(দিনাজপুর২৪.কম) আবাহনীর হয়ে বল হাতে মাশরাফি বিন মুর্তজা সবাইকে ছাড়িয়েছেন অনেক আগেই। আসরে ৩৫ বছর বয়সী এ পেসার নিয়েছেন রেকর্ড ৩৯ উইকেট। এছাড়াও ২৯ উইকেট নিয়ে তার পরেই আছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ২৪ বছরের তরুণ স্পিনার আসিফ হাসান। সমান উইকেট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শহীদ, চতুর্থ স্থানে ফরহাদ রেজা। আর মোহামেডানের হয়ে বল হাতে ২৮ উইকেট নেয়া ১৯ বছরের তরুণ পেসার কাজী অনিক আছেন ৫ম স্থানে। অন্যদিকে ব্যাট হাতে আবাহনীর ১৯ বছরের তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে।
১৬ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭.৬৭ গড়ে ৭৪৯ রান। ৪ সেঞ্চুরির সঙ্গে হাঁকিয়েছেন দুটি ফিফটিও। চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে ব্যাট হাতে সেরা পাঁচের দ্বিতীয় স্থানে আছেন জাতীয় দলের আরেক তারকা এনামুল হক বিজয়। ৪ সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটিতে ৪৯.৬০ গড়ে করেছেন ৭৪৪ রান। এছাড়াও সেরা পাঁচে আছেন রূপগঞ্জের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান নাঈম ইসলাম, প্রাইম দোলেশ্বরের ফজলে মাহমুদ ও কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের মোহাম্মদ আশরাফুল। এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ তারকা হাঁকিয়েছেন আসরে সর্বাধিক পাঁচ সেঞ্চুরি। ১৩ ম্যাচে ৬৬৫ রান করে জায়গা করেছেন ৫ম স্থানে। সেঞ্চুরির দিক থেকে শান্তর অবস্থান তার পরেই। বলতে গেলে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের এ আসরে ব্যাটে বলে দুই প্রজন্মের ক্রিকেটাররাই দেখিয়েছেন দাপট।
বল হাতে আবাহনীর হয়ে মাশরাফি যেভাবে ছুটছিলেন, রেকর্ডটি তার পাওনাই ছিল। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর এক মৌসুমে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন তিনি দুই ম্যাচ হাতে রেখেই। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ৩৫ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনি। লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর লীগে সেটিই ছিল রেকর্ড। গত ২৭শে মার্চ শেখ জামালের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে মাশরাফি ছুঁয়েছিলেন রনিকে। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খেলাঘরের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে পৌঁছেন নতুন উচ্চতায়। ১৬ ম্যাচেই ৩৯ উইকেট, ৪ ও ৫ উইকেট দুইবার করে। সেরা পাঁচে একমাত্র স্পিনার আসিফ হাসান। বাকি চারজনই পেসার। এর মধ্যে ইনজুরির কারণে জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়া মোহাম্মদ শহীদ ফিরেছেন ফর্মে। ১৬ ম্যাচে তার শিকার আসিফের সমান হলেও ইকোনমিতে পিছিয়ে গেছেন। সমান উইকেট নিলেও একই কারণে ফরহাদের অবস্থান চতুর্থ স্থানে। আসরে শেখ জামাল ধানমন্ডির ১৮ বছর বয়সী পেসার রবিউলিের শিকার ২৭ উইকেট। বল হাতে সর্বাধিক উইকেট পাওয়া মাশরাফিই সবচেয়ে কৃপণ। ৪.৪২ ইকোনমি গড় তার। আসরে লিটন কুমার দাসের শুরুটা ছিল দারুণ। কিন্তু শ্রীলঙ্কাতে নিদাহাস ট্রফিতে গিয়ে তিনি লীগের সব ম্যাচে খেলতে পারেননি। তবুও ১০ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরিতে তার সংগ্রহ ৫৩৭ রান। এছাড়াও বেশ কিছু দিন ব্যাট হাতে শীর্ষে ছিলেন খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির ভারতীয় তারকা অশোক মেনারিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৬৬২ রান। তার অবস্থান তালিকার ৬ নম্বরে। অন্যদিকে এ আসরে ব্যাট হাতে আরেক চমক অভিজ্ঞ আশরাফুল। তার দলকে অবনমন থেকে বাঁচাতে না পারলেও ৫ সেঞ্চুরির তিনটিই হাঁকিয়েছেন টানা। তার উপরে থাকা ৪ ব্যাটসম্যানই করেছেন ৭’শর বেশি রান। এর মধ্যে প্রাইম দোলেশ্বরের ফজলে মাহমুদ ৭০৮ রান করেছেন ৪৭.২০ গড়ে। এছাড়াও ৪ বছর ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা ৩১ বছর বয়সী নাঈম ইসলামও ফিরেছেন দারুণ ফর্মে। রূপগঞ্জের হয়ে ৫৮.৩৮ গড়ে করেছেন ৭২০ রান। তার উপরেই অবস্থান করছেন এনামুল হক বিজয়। যদিও বেশ কিছু দিন ছিলেন জাতীয় দলের বাইরে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে দলে ফিরলে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
সর্বাধিক রান
খেলোয়াড় ম্যাচ ইনিংস নট.আ. রান সর্বোচ্চ গড় ৫০/১০০
শান্ত (আবাহনী) ১৬ ১৬ ৩ ৭৪৯ ১৫০* ৫৭.৬১ ২/৪
এনামুল হক (আবাহনী) ১৬ ১৬ ১ ৭৪৪ ১২৮ ৪৯.৬০ ৪/২
নাঈম ইসলাম (রূপগঞ্জ) ১৬ ১৫ ২ ৭২০ ১১৬* ৫৩.৩৮ ৬/১
ফজলে মাহমুদ (দোলেশ্বর) ১৬ ১৬ ১ ৭০৮ ১২০* ৪৭.২০ ৩/২
আশরাফুল (কলাবাগান) ১৩ ১৩ ৩ ৬৬৫ ১২৭ ৬৬.৫০ ১/৫
সর্বাধিক উইকেট
খেলোয়াড় ম্যাচ ওভার মেডেন রান উই. গড় সেরা ৪উই.
মাশরাফি (আবাহনী) ১৬ ১২৮.৫ ১০ ৫৭০ ৩৯ ১৪.৬১ ৬/৪৪ ৪
আসিফ হাসান (রূপগঞ্জ) ১৬ ১৪৬.৫ ১১ ৬৫৭ ২৯ ২২.৬৫ ৪/২৩ ১
মো. শহীদ (রূপগঞ্জ) ১৬ ১৪৯ ৯ ৭৭০ ২৯ ২৬.৫৬ ৪/২৬ ২
ফরহাদ রেজা (দোলেশ্বর) ১৬ ১২৮.৩ ৭ ৭৭৯ ২৯ ২৬.৮৬ ৪/৩৭ ২
অনীক (মোহামেডান) ১১ ৯৮.৫ ৫ ৬৩৫ ২৮ ১৯.১০ ৬/৪৯ ৩
রবিউল হক (শেখ জামাল) ১৪ ১০০.৪ ২ ৪৫০ ২৭ ১৬.৬৬ ৫/৩৩ ১
-ডেস্ক