(দিনাজপুর ২৪.কম) সম্প্রতি সারা দেশে মুক্তি পেয়েছে এস এ হক অলিকের নতুন ছবি ‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’। তাই তো ছবি মুক্তির আগে বেশ ব্যস্ত থাকছে হয়েছে। এখনো সেই ব্যস্ততা অব্যাহত রয়েছে। কিছুদিন আগেও এমনটা ছিল না। আর এই সময়টাকে দারুণভাবে উপভোগ করছেন বলেও জানান অলিক। ব্যস্ততার ফাঁকে সম্প্রতি কথা হয় তাঁর সঙ্গে। জানালেন, ‘ছয় বছর পর মুক্তি পেয়েছে তাঁর নতুন ছবি আরো ভালোবাসবো তোমায়। সময়টা যদিও এখন খুব ‘টাফ’ যাচ্ছে, তারপরও এ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন তিনি। কথাপ্রসঙ্গে বললেন, ‘সত্যি কথা বলতে ছবি যদি ভালো হয় দর্শক তা দেখবেই। ‘হৃদয়ের কথা’ সিনেমার মুক্তির সময়টাতেও আমি তেমন দেখেছি। তখন অশ্লীল ছবির জোয়ারই চলছিল বলা চলে। সে সময়টাতে সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন ছবির কারণে ‘হৃদয়ের কথা’ মানুষ ঠিকই ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আর গানগুলো তো দেশে ও দেশের বাইরের মানুষের মুখে মুখে শোনা গেছে।’
অলিক এও স্বীকার করলেন, ‘হৃদয়ের কথা’ (২০০৬) আর ‘আকাশছোঁয়া ভালোবাসা’ (২০০৮) থেকে এখনকার প্রেক্ষাপট সত্যিই ভিন্ন। সেটা কেমন? ‘তখন কিন্তু সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। একটা পরিবেশও ছিল। সিনেমা হলের সংখ্যা এখন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এটা একটা শঙ্কার জায়গা।’
তবে একটা আশার দিক রয়েছে বলেও জানালেন অলিক। বললেন, ‘এবারের ঈদে দর্শক অনেক বেশি হলমুখি হয়েছে। বাংলা ছবির প্রতি মানুষের আগ্রহ এক বছর আগে থেকে অনেক বেশি বেড়েছে। এই ব্যাপারটা আমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।’
‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’ ছবিটি দেখতে দর্শক কেন হলে যাবেন জানতে চাইলে অলিক বলেন, ‘আমার এ ছবির আছে একটা জোরালো গল্প। চেষ্টা করেছি গল্পের উপস্থাপন সঠিকভাবে করার। এটি বাংলা ভাষার ছবি, বাংলাদেশের ছবি। এই ছবির সবাই বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পী, গায়ক-গায়িকারাও সবাই এ দেশেরই। লোকেশনও বাংলাদেশের। এই ছবিটা যখন সবাই দেখবেন তখন দর্শকেরা পুরোপুরি একটা বাংলাদেশকে দেখবেন।’
জামালপুরের ছেলে অলিকের স্বপ্ন ছিল অভিনেতা হওয়ার। ১৯৯২ সালে পড়াশোনা করতে ঢাকায় আসেন।। ঢাকায় আসার পর সেই স্বপ্ন ডালপালা মেলতে শুরু করে। ১৯৯৫ সালে যোগ দেন নাটকের দল দৃষ্টিপাত নাট্যসংসদ এ। এ দলের প্রায় সবকটি প্রযোজনায় কাজ করেন তিনি। বললেন, ‘আমি কিন্তু এখনো টুকটাক অভিনয় করি। তবে আমি নির্মাতা হিসেবে কাজ করে বেশি আনন্দ পাই। আমি মনে করি, সৃষ্টির আনন্দটা সত্যিই অন্যরকম।’
নির্মাতা হওয়ার গল্পটা কেমন জানতে চাইলে অলিক জানালেন, ‘১৯৯৬ সালের ঘটনা। একটি নাটকের কাজে আমি জিনাত ভাবির (জিনাত হাকিম, নাট্যকার ও পরিচালক) বাসায় যাই। তখন নাটক নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছিল। এরই মধ্যে হাকিম ভাইকে (আজিজুল হাকিম) ডেকে ভাবি বললেন, অলিক যদি নির্মাতা হয় তাহলে ভালো করবে। তারপর জিনাত ভাবিই একদিন আমাকে প্রখ্যাত নির্মাতা আমজাদ হোসেনের কাছে নিয়ে যান। তাঁর কাছ থেকে কাজ শিখতে থাকি। তিনি আমার গুরু।’
১৯৯৯ সালে ‘অতঃপর তাহারা’ নাটকটির মাধ্যমে পরিচালনায় নাম লেখান অলিক। নাটকের নির্মাতা নাকি চলচ্চিত্রের নির্মাতা কোন পরিচয়টাকে বেশি উপভোগ করেন জানতে চাইলে অলিক বলেন, ‘এটা ঠিক যে, আমি এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক নাটক নির্মাণ করেছি। তারপরও আমাকে শুনতে হয়, আপনি কি নাটকও বানান! বিষয়টা খুব ইন্টারেস্টিং লাগে। কিন্তু ‘এক হৃদয়ের কথা’ সিনেমার কথা বললে আমার আর কোনো পরিচয় দিতে হয় না। আমিও সেই পরিচয় নিয়ে বাঁচতে চাই।’(ডেস্ক)