স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর২৪.কম) দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র হল বাহাদুর বাজার। পরিবারকে সুস্থ্য সবল রাখতে কে না চায়? কিন্তু সেই পরিবেশ নেই বাহাদুর বাজারে। জনসাধারণ যেন বলির পাঠা। কোন উপায় অন্ত না পেয়ে করছে হচ্ছে অস্বাস্থ্য পরিবেশে বাজার। দিনাজপুর বাহাদুর বাজার যেন এক ভোগান্তির নাম। নোংরা- অপরিস্কারে ভরা পুরো বাজার। বিশেষ করে মাংসহাটি, মুরগিহাটি ও মাছ হাটিতে জবুথবু অবস্থা। মুরগীহাটিতে দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে বাজারে প্রবেশ করতে হয়। বাজারের ভেতরে কাদা ও স্যাঁতস্যাতে। বাজারের ভেতরে পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। অল্প পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাহাদুর বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে গড়ে উঠেছে কলাহাটি ও সবজি বাজার। শহরের ব্যস্ততম এলাকা লিলিমোড় হতে বুটিবাবুর মোড় পর্যন্ত অনিয়ন্ত্রিত সবজি ও কলার বাজার রাস্তার মধ্যে বসিয়েছে। ফলে যানজট আরও বেড়েছে। সকাল বেলা সহজে রিক্সা কিংবা অটো রিক্সা নিয়ে জনসাধারণ যেতেই পারে না অন্য এলাকায়। এদিকে উত্তর পার্শ্বের বাজারটি আরও নাজুক অবস্থা। সকালের সবজি বাজার ও পাইকারী আড়ৎগুলো রাস্তার উপর সবজি বেচা-কেনার ফলে জনসাধারণ পায়ে হেটেও রাস্তা পারাপার হতে পারে না। সূত্রটি জানায়, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা রাস্তার উপর দোকান বসার কারণে মানুষের ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। বাহাদুর বাজারের উত্তর-পূর্ব পার্শ্বের সবজি বিক্রির জন্য গোলকুঠি থেকে হাসপাতাল রোড পর্যন্ত পায়ে হেটে যাওয়া যায় না। তাছাড়া এখানে কোন প্রকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। বর্ষাকালে কিংবা সামান্য বৃষ্টির কারণে বাজারের অভ্যন্তরে ও বাইরে হাটু পানি জমে যায়। বাজার কমিটি যেন জেগে থেকেই ঘুমোচ্ছে। তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। এদিকে পুরাতন বাহাদুর বাজারের অবস্থা আরও খারাপ। বাজারের পশ্চিমে গড়ে উঠেছে পাইকারী, খুচরা দোকানী। এছাড়াও কয়েকজন রড, সিমেন্ট, কাঁচামাল ব্যবসায়ী, ইমপোট ও এক্সপোর্টার রয়েছে। তাদের পিকআপ ভ্যান, সাধারণ ভ্যান, ময়লা-আবর্জনা এবং ট্রাক রাস্তার উপর কমবেশি সব সময় যানজটের সৃষ্টি করছে। তাদের কোন কথাই বলাই যায় না। কোন কিছু বলতে গেলেই বলে আমি অমুক নেতার লোক। বেশি কথা বলবেন না। অসুবিধা আছে। এখান থেকে চলে যান। ভোক্তাদের আর কি করারও বা আছে? এদিকে বাহাদুর বাজার থেকে আব্দুর রহিম সুপার মার্কেট পর্যন্ত রাস্তায় মধ্যে ভ্রাম্যমান ফলের দোকান সহ বিভিন্ন হকার দোকান নিয়ে বসেছে। এছাড়াও সকালে এখানে রাস্তার উপর মুরগীর বিষ্ঠা বস্তার উপর বস্তা রাস্তার ফেলে রাখে। সেখানে নাকে রুমাল চেপে পথ হাটতে হয় পথচারীদের। সকাল ১০ থেকে ১১টা পর্যন্ত ময়লা স্তুপ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে রাস্তার মধ্যে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে প্রায় দুঘর্টনা ঘটছে। বাহাদুর বাজারের ভ্রাম্যমান পিকআপ ভ্যান, ভ্রাম্যমান বাজার ও হকারদের রাস্তার উপর দোকান দেওয়ার ফলে ঘটছে সড়ক দুঘর্টনা এবং যানজট। সূত্রমতে, দিনাজপুর বাহাদুর বাজারের উত্তরা মার্কেট, জাবেদ সুপার মার্কেট, আব্দুর রহিম সুপার মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি মার্কেটে মেয়াদত্তীর্ণ ঔষধ, তেল, সাবান, গুড়ো দুধ, কসমেটিকস সহ নকল ও ভেজাল পণ্য বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয় বিক্রি হচ্ছে মানহীন যৌন উত্তেজক কোমল পানীয় সহ ঔষধ। ফলে যুবদের যৌন শক্তি নষ্ট হচ্ছে। এক কথায় নানা সমস্যায় জর্জড়িত দিনাজপুর বাহাদুর বাজার। দিনাজপুরে শত শত এনজিও থাকলেও তাদের নাগরিক ভোগান্তি নিয়ে কথা বলতে বা সমাধানের উদ্যোগ নিতে এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। দিনে দিনে নাগরিক সমস্যা বেড়েই চলেছে। নাগরিক সমস্যা নিয়ে দিনাজপুর পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাস্তার উপর ময়লাগুলো নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। তবে বাজারের ভেতরের বিষয়ে আমার কিছুই করার নেই। এটা বাহাদুর বাজার কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। দিনাজপুর বাহাদুর বাজার কাঁচা বাজার ব্যবসায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাজারের অবস্থা ভালই রয়েছে। খারাপ তো কিছু দেখি না। সুধীমহল ও ভুক্তভোগীরা দিনাজপুর বাহাদুর বাজারের সুন্দর ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট করে এ সমস্ত নাগরিক সমস্যার সমাধানের জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার, দিনাজপুর পৌর মেয়র ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Notify me of follow-up comments by email.
Notify me of new posts by email.