এস.এন.আকাশ, সম্পাদকীয় (দিনাজপুর২৪.কম) বাজারে ভেজাল ও মানহীন ওষুধের ছড়াছড়ি সংবাদপত্রে এমন খবর প্রায়ই থাকে। মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এমন অনেক ওষুধ ধরাও পড়ে, কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হয় কালেভদ্রে। অথচ প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে রোগ থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে ওষুধ কিনতে হয়। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ মানুষকে রোগ থেকে মুক্তি তো দেয়ই না, বরং মৃত্যু ত্বরান্বিত করে। তাই সমাজের সচেতন অংশ এসব ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত, সংসদীয় কমিটি ও ওষুধ প্রশাসন অতীতে কিছুকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ তৈরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এমন কিছু প্রতিষ্ঠান নানা কৌশলে তাদের নিষিদ্ধ ওষুধও বাজারজাত করছে। আর এসব কাজে ওষুধ প্রশাসনেরই কিছু লোকের সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। ওষুধ প্রশাসনের প্রধান দায়িত্ব হলো, জনস্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এমন কোনো ওষুধ যাতে বাজারে না আসতে পারে তা নিশ্চিত করা। সেই ওষুধ প্রশাসনের বিরুদ্ধেই যদি ভেজালকে উৎসাহিত করার অভিযোগ ওঠে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? শরীরে যখন জীবাণু বাসা বাঁধে, চিকিৎসক তখন বিশেষ জীবাণুর জন্য বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দেন সেই জীবাণু নাশ করার জন্য। ওষুধ যদি ভেজাল হয়, জীবাণু মরবে না। ওষুধে ব্যবহৃত উপাদান যদি কম হয় বা নিম্নমানের হয়, তাহলেও জীবাণু মরবে না। বরং সেই ওষুধের বিরুদ্ধে জীবাণু প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলবে। তখন ভালো কম্পানির সঠিক ওষুধ খাওয়ালেও জীবাণু মারা যাবে না। সেই রোগী তখন ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে। অতীতে বেশ কিছু কোম্পানির বিরুদ্ধে এমন অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ দেখা ওষুধ প্রশাসনের কাজ নয়। তাদের প্রধান কাজ হলো, জনস্বাস্থ্যের ক্ষতিরোধ করা। তেমন কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হলে সে কাজটিও করতে হবে আবার বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী। কিন্তু বাস্তবে সেই কাজটি সঠিকভাবে করা হচ্ছে না বলেই প্রকাশিত খবরাখবর থেকে জানা যায়। জানা যায়, এরইমধ্যে এমন কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরকারিভাবে ওষুধ কেনা হয়েছে। আমরা চাই, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারি সব দপ্তর ও সংস্থা এ ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে এবং ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ থেকে নাগরিকদের রক্ষা করবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত বাড়াতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Notify me of follow-up comments by email.
Notify me of new posts by email.