(দিনাজপুর২৪.কম) দিয়েগো ম্যারাডোনা-পরবর্তী যুগে আর্জেন্টিনার লিজেন্ড খেলোয়াড় গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা। ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় তার। খেলেন ২০০২ সাল পর্যন্ত। আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার তিনি। দেশটির হয়ে ৫০ গোল করা প্রথম খেলোয়াড় বাতিস্তুতা। ১১ বছরের ক্যারিয়ারে আর্জেন্টিনার হয়ে ৭৭ ম্যাচে করেন ৫৪ গোল। দেশটির হয়ে তারচেয়ে বেশি গোল আছেন একমাত্র লিওনেল মেসির। বার্সেলোনার এ স্ট্রাইকারের গোল ১১৭ ম্যাচে ৫৮। বাতিস্তুতার চেয়ে তার মাত্র ৪ গোল বেশি। দিয়েগো ম্যারাডোনার পরে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে প্রতিভাবান ফুটবলার মনে করা হয় লিওলেন মেসিকে। কিন্তু এক হিসেবে মেসির অনেক এগিয়ে বাতিস্তুতা। ২০১৬ সালে জাতীয় দলের হয়ে বাতিস্তুতার গোল স্পর্শ করেন মেসি। ৫৪ গোল করতে বাতিস্তুতার যেখানে ৭৭ ম্যাচ লেগেছিল মেসির সেখানে লাগে ১১২ ম্যাচ। ৫৪ গোল করতে বাতিস্তুতার চেয়ে ৩৫ ম্যাচ বেশি খেলতে হয় মেসিকে। বাতিস্তুতা ম্যাচ প্রতি করেন ০.৭ গোল। সেখানে মেসির গড় গোল ০.৫। এই হিসেবে মেসির চেয়ে অনেক এগিয়ে বাতিস্তুতা। কিংবদন্তি দিয়েগোর ম্যারাডোর সঙ্গে তুলনা করলেও এগিয়ে বাতিস্তুতা। ম্যারাডোনা পুরো ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে ৯১ ম্যাচে করেছেন ৩৪ গোল। সেখানে তারচেয়ে অনেক কম ম্যাচ খেলে প্রায় দ্বিগুণ গোল বাতিস্তুতার। এছাড়া দেশের হয়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতেন তিনি। ১৯৯২ সালে ফিফা কনফেডারেশন্স কাপও জেতেন। এছাড়া ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ বিশ্বকাপে করেন হ্যাটট্রিক তিনি। বিপরীতে লিওনেল মেসি এখন পর্যন্ত তার দেশটে একটি শিরোপাও এনে দিতে পারেননি। কোপা আমেরিকার সর্বশেষ দুই আসরে তার দল ফাইনালের চিলির কাছে হেরে যায়। বাতিস্তুতাকে নিয়ে এত তুলনা ও আলোচনার কারণ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। রাশিয়া-বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা ছিলেন ড্রেসিং রুমে। উত্তরসূরিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ড্রেসিং রুমে যান বাতিস্তুতা। সেখানে বর্তমান দলের খেলোয়াড়দের আচরণে তিনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তিনি আর্জেন্টিনার ড্রেসিং রুমে গিয়ে সবাইকে ‘হ্যালো’ বলেন। জবাবে দলের অর্ধক খেলোয়াড় তার দিতে কোনো ভ্রুক্ষেপই করেনি। মাত্র কয়েকজন উঠে তার সঙ্গে হাত মেলায়। ওই ঘটনার পর নিজের কষ্টের কথা তিনি সাংভাদিকদের সামনে জানান। বলেন, ‘আমি ড্রেসিং রুমে গিয়ে সবাইকে হ্যালো বললাম। দলের মাত্র অর্ধেক খেলোয়াড় আমাকে একটু সময় দেয়।’ ৪৮ বছল বয়সী সাবেক তারকা খেলোয়াড় আক্ষেপ করে আরো বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে আমি আরেকটু আগ্রহ চেয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে একটু উচ্ছ্বসিত অভ্যর্থনা আশা করেছিলাম। আমি কে-সে কারণেএ প্রত্যাশা করিনি। বরং আমি একসময় জাতীয় দলে খেলেছি এবং এই ড্রেসিংরুমে ছিলাম সেই হিসাবে তাদের কাছে এটা প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। তবে এ জন্য আমার কোনো কষ্ট নেই। তাদের এমন আচরণেন জন্য আমি তাদেরকে দোষ দিচ্ছি না। আসলে তাদের দায়িত্বে যারা রয়েছে তারা তাদেকে শেখায়নি যে, একজন সিনিয়র মানুষের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হয়। তাদের ভেতরে তো কোনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিল না। আমি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে একই ড্রেসিং রুমে থেকেছি। তাদের সঙ্গে খেলেছি। সিনিয়রদের পেলে তারা কেমন সম্মান দেখাতেন তা আমি নিজ চোখে দেখেছি। কিন্তু এখনকার খেলোয়াড়দের সেটা শেখানো হয় না।’ দুরন্ত গতি ও ঝাকড়া চুলের বাতিস্তুতা ইংল্যান্ড কিংবা স্পেনের কোনো ক্লাবে খেলেননি। ইতালির ক্লাব ফিওরেন্তিনার কিংবদন্তিসম খেলোয়াড় তিনি। এই ক্লাবটির হয়ে জিতেছেন একাধিক শিরোপা। ২০০৫ সালে সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসর নেন বাতিস্তুতা। ফুটবলের কারণে তার শরীরের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। শুধু ভালবাসার কারণে শেষের দিকে ইনজুরি নিয়েও মাঠে নামতেন তিনি। এতে তার হাটুর হাঁড়ে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়।এতে তার হাটুর নিচের অংশ কেটে ফেলার শঙ্কায় পড়েছিলেন একবার। তবে টানা চিকিৎসায় থাকা তখনকার মতো বেঁচে যান তিনি। বাতিস্তুতা নিজেই এসব কথা জানালেন।-ডেস্ক
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Notify me of follow-up comments by email.
Notify me of new posts by email.