(দিনাজপুর২৪.কম) গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় রক্তাক্ত এক তরুণকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের কাছে এমন ছবি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মাহমুদা বেগম ও আবদুস সাত্তার। জানা গেল রক্তাক্ত ওই ছেলেটির নাম জাকির হোসেন শাওন। তিনি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
মাহমুদা ও সাত্তার জাকিরের মা-বাবা। হামলার পর থেকে ছেলের কোনো খবর পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই আজ সোমবার দুপুরে জাকিরের একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিয়ে হলি আর্টিজানের সামনে হাজির হন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন স্বজন। পরিবারটিকে ছবি হাতে কাঁদতে দেখে সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ফটোসাংবাদিক তাঁদের তোলা ছবিগুলো বের করেন। সেখান থেকে পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে এমন একটি রক্তাক্ত ছেলের ছবিকে জাকির বলে চিহ্নিত করেন মা-বাবা। তাঁদের কাছে পাসপোর্ট সাইজের ছবির সঙ্গেও এর মিল পাওয়া যায়। মা মাহমুদা বলেন, ছেলে ওই রেস্তোরাঁর বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। হামলার পর থেকেই তাঁকে খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁর (শাওন) খোঁজে কয়েকবার গুলশান থানার পুলিশের কাছে গেছেন। পুলিশ ইউনাইটেড হাসপাতালে জাকিরকে খোঁজার কথা বলে। সেখানে গিয়ে তাঁরা ছেলেকে পাননি। গতকাল রোববারও রাত দেড়টা পর্যন্ত তাঁরা গুলশান থানায় বসে ছিলেন। কিন্তু পুলিশ ছেলে জাকিরের কোনো খোঁজ দিতে পারেনি। মা-বাবার কাছে থাকা জাকিরের ছবি দেখে ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকেরা রক্তাক্ত অবস্থায় এক তরুণকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ে যাওয়ার ছবিটি দেখান। এ সময় ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি জানান মা-বাবা। জানান, ছেলে ওই রেস্তোরাঁতেই দেড় বছর ধরে বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। মা মাহমুদা জানান, তাঁদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের নয়াপাড়ার গুদনাইল এলাকায়। গত বৃহস্পতিবার ইফতারের পরে ছেলে জাকির ফোন করেছিলেন। জানিয়েছিলেন ঈদের বোনাস পেয়েছেন। রোববার বাড়ি আসবেন। বাবা আবদুস সাত্তার বলেন, তিনি নারায়ণগঞ্জে মেঘনা ডিপোতে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। গত শনিবার টিভিতে রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনা দেখেন। এরপর থেকেই ছেলের খোঁজ পাচ্ছেন না। রেস্তোরাঁর হিসাবরক্ষণ বিভাগের ব্যবস্থাপক সাজেদুর রহমান বলেন, জাকিরকে তাঁরা হাসপাতালে শনাক্ত করেছেন। তাঁকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গিরা গত শুক্রবার রাতের বিভিন্ন সময় তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক। এর মধ্যে জাপান সরকার তাদের সাত নাগরিকের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। ইতালির নাগরিক নিহত হয়েছেন নয়জন। একজন ভারতীয় নাগরিক। শুক্রবার রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে মারা গেছেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। আর শনিবার সকালে অভিযানে মারা গেছে ছয় সন্ত্রাসী। গ্রেপ্তার হয়েছে একজন। অভিযানে একজন জাপানি, দুজন শ্রীলঙ্কান ও ১০ জন বাংলাদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। -সূত্র প্রথম আলো
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Notify me of follow-up comments by email.
Notify me of new posts by email.