(দিনাজপুর২৪.কম) ঘুষ গ্রহণ, কর্মচারীদের হয়রানিসহ নানা অভিযোগে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগ তদন্ত করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শাখা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্য এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডিসি মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস দিনাজপুর২৪.কমকে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তাকে কিছু না জানিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করায় তিনি হতাশ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও ডিসি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগটি তদন্তের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যেকোনো সময় অভিযোগ তদন্ত শুরু করবে তারা।
সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গত জানুয়ারিতে অভিযোগটি আসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে। এ ঘটনার উচ্চতর তদন্তে জন্য সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (শৃঙ্খলা-১) মো. সবুর হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি মন্ত্রিপরিষদ-সচিবকে দেয়া হয়।
জনপ্রশাসনের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি অধিশাখার এক কর্মকর্তা জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগটির তদন্ত শুরু হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কালেক্টরেট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস এখানে যোগদানের পর থেকে ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। এই হয়রানি থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ তার স্ত্রী বিউটি বিশ্বাসের হাতে টাকা তুলে দেয়া।
ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, তিনি বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শনের নামে সেখানকার কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি করেন। তাদের বলা হয়, তার (ডিসি) স্ত্রীর দেখভাল করতে। স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি টাকা ও স্বর্ণের জিনিস চান। ডিসির স্ত্রীর কথামতো কেউ কাজ না করলে তাকে হয়রানি করা হয়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করে তাতে আরো বলা হয়, গত বছরের নভেম্বর মাসে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার ভূমি সহকারী (সহকারী তহশিলদার) নিয়োগের সময় প্রত্যেকের কাছ থেকে ঘুষ নেন ডিসি। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ডিসি কার্যালয়ের ডিজিটাল রেকর্ডরুমে ডাটা অ্যান্ট্রি কাজের জন্য কিছুসংখ্যক লোক অস্থায়ী ভিত্তিতে নেয়া হয়। সেই অস্থায়ী নিয়োগেও মোটা অঙ্কের ঘুষ নেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করলে জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যারা অভিযোগ দিয়েছ, তারা আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছে। আমি বরং এ জেলায় আসার পর অনেক দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুষ গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছি। তারপরও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে।’ কয়েকজন ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কাজটি করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
লিখিত অভিযোগের একটি কপি পাওয়ার কথা জানিয়ে ডিসি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের কপি আমাকে এ আসনের এমপি সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী সাহেব দিয়ে গেছেন এবং তিনি বিষয়টি জানেন।’
স্ত্রীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে ডিসি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিষয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। এটা আমাকে হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পাদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ’অভিযোগটি আমি পেয়েছি। ডিসি সাহেবকে বলেছি বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে।’ -ডেস্ক
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Notify me of follow-up comments by email.
Notify me of new posts by email.