আল আমিন জামিনুর (দিনাজপুর২৪.কম) বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলে কৃষি উৎপাদান বৃদ্ধি এবং কৃষককে বাঁচাতে খাল ও নদী খনন প্রকল্পের বিকল্প নাই। ভারতের পানি নিয়ন্ত্রন আগ্রাসন থেকে কৃষিকে বাঁচাতে দ্রুত প্রকল্প গ্রহন করা দেশের স্বার্থে প্রয়োজন। দিনাজপুর জেলায় এমনিতেই নদ-নদী সংখ্যা কম। পুনর্ভবা, কাঁকড়া, গর্ভেস্বরী, আত্রাই, ছোট যমুনা সহ কয়েকটি মাঝারি ও ছোট নদী দিনাজপুর জেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীগুলো উৎস মুখ ভারতে। এক তর্ফাভাবে পানি প্রত্যাহারের ফলে সুষ্ক মৌসুম এলেই নদী থাকে পানি শূন্য ও ধূধূ বালুচর। খেলার মাঠে পরিনত হয়। কোথাও পানিতে পানিতে পা ডুবে না নদীর বুকে ঘাস। আবার বর্ষার মৌসুম এলেই দুকূল ছাপিয়ে বন্যার আনাগোনা। অল্পতেই বন্যায় ডুবে যায় শত শত একর জমি ফসল। গৃহহারা হয় শত শত পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের অবহেলা আর উদাসীনতার কারনে গত সাড়ে চার দশকেও পানিশূন্য বৃহত্তর দিনাজপুরের পুনর্ভবা নদী খননের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। অথচ দিনাজপুর জেলার উদ্ধৃত খাদ্য সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। কৃষি প্রধান এই জেলার এক সময় এই নদীর পানি দিয়ে শত শত হেক্টর জমি চাষাবাদ করা হত। দুইপারের মানুষরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু এখন পানির অভাবে নদীতে দেখা দিয়েছে বালুচর। নদীও নেই আর নদীতেও পানিও নেই। শুধু বালু আর বালু। পুনর্ভবা নদীর উৎস ভারত ভূখন্ডে। সুতরাং সেইখানে বাদ দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করায় গ্রীষ্মকালে যেমন থাকে পানিশূন্য নদী আর তেমনি বর্ষাকালে বন্যার দেখা দেয়। প্রতিবছর বন্যায় ধ্বংস হয়ে যায় হাজার হাজার টন খাদ্যশস্য। যার প্রভাব পড়ে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে। বর্তমানে নদীর পানির অভাবে খেত খামার সব শুকিয়ে যাচ্ছে। নদীর বুকে জেগে উঠার চরে সারাদিন চলে বালি উত্তোলন। তাই টোলার ট্রাক্টর দাপিয়ে বেড়ায় শুকনো নদীর বুকে। নদী খনন করা হলে দুই পারে শত শত হেক্টর জমিতে সেচের আওতায় আনা সম্ভব হতো। অন্যদিকে অনেক পরিবার মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করার সুযোগ পাবে। দিনাজপুর জেলায় প্রতি বছর চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি খাদ্য উৎপাদন করে কৃষকরা। উৎপাদনের ক্ষেত্রে আবারও দেখা দিবে সবুজ বিপ্লব। যা দেশের খাদ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবে, সচ্ছলতা ফিরে আসবে কৃষক পরিবারের মাঝে। আর গতি শঞ্চার করবে জাতীয় অর্থনীতিতে। তাই শস্যভান্ডার বৃহত্তর দিনাজপুরের মানুষের দাবি বিলম্ব না করে দ্রুত পুনর্ভবা নদীসহ অন্যান্য নদীগুলো এখনেই খাল খনন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হউক বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। পুনর্ভবা নদী পূর্বপাড়ে দিনাজপুর শহর ও পশ্চিমপাড়ে বিরল উপজেলা নদীটি খননের পদক্ষেপ গ্রহন করা হলে দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলার দুইপারের কয়েক লক্ষ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। তারা বেঁচে থাকার অবলম্বন খুজে পাবে। এমনটি আশা নদীর দুই পারের মানুষের।